সামাজিক সমস্যার প্রভাব

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক গন, আশা করছি আপনারা সকলে অনেক ভাল আছেন। আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে সামাজিক সমস্যার প্রভাব নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
সামাজিক সমস্যার প্রভাব
আপনাদের মধ্যে যারা সামাজিক সমস্যার প্রভাব সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক তাহলে অবশ্যই আজকের এই আর্টিকেল শুরু থেকে একদম শেষ পর্যন্ত পড়ুন। তাহলে অবশ্যই সামাজিক সমস্যার প্রভাব সম্পর্কে জানতে পারবেন।

প্রশ্নঃ 

সামাজিক সমস্যার প্রভাব।
সামাজিক সমস্যার প্রভাব বর্ণনা কর।
সামাজিক সমস্যার প্রভাব ব্যাখ্যা কর।
সামাজিক সমস্যার প্রভাব আলোচনা কর।

ভূমিকাঃ

সমাজ গতিশীল এবং পরিবর্তনশীল। কিন্তু সমস্যাহীন সমাজ স্থবির হয়ে পড়ে। তবে এ ধরনের সমাজের অস্তিত্ব পৃথিবীতে পাওয়া যাবে না। মানুষ আবার সমস্যা নিয়ে বসে থাকে না। সমাধানের জন্য প্রচেষ্টাও চালায়। একটি সমস্যার সমাধান হলে আরেকটি সমস্যার সৃষ্টি হয়। অপূর্ণতা থেকে সমস্যার উদ্ভব। এটি সামাজিক পরিবর্তনের একটি অন্যতম উপাদান।

সামাজিক সমস্যার প্রভাবঃ 

সামাজিক সমস্যা সমাজে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। এর প্রভাবে অর্থ সামাজিক জীবনে দেখা দেয় নানা সমস্যা। সমস্যাগুলো সমাজে ব্যাধি হিসেবে বিবেচিত। নিচে সামাজিক সমস্যার প্রভাব বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হলোঃ- 

১। জীবনযাত্রা ব্যাহতঃ 

সামাজিক সমস্যার ফলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। মানুষ তার সামাজিক ভূমিকা পালনের বাধা প্রাপ্ত হয়। মানুষ এক অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে দিনাতিপাত করে। সমস্যার তীব্রতায় ব্যক্তি তার কাজকর্ম ঠিকভাবে করতে পারেনা। সমাজের মধ্যে তখন সৃষ্টি হয়ে যায় নানা ধরনের বাধা যার কারণে কাজের দিকে কখনোই মনোযোগ আসে না।

২। নৈতিক অবক্ষয়ঃ 

মানুষের নৈতিকতার অবক্ষয় সামাজিক সমস্যার প্রভাবে হয়ে থাকে। তখন মানুষের হতাশা ব্যর্থতা দুশ্চিন্তায় পতিত হয়। ফলে নীতিবাদের অধঃপতন ঘটে। সচ্চরিত্রের মানুষ পাওয়া তখন দুষ্কর হয়ে পড়ে। কেননা সব সময় তাদের মনে আলাদা একটি ভয় কাজ করে। এমন যে যে সে সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারবে কিনা এই বিষয়ে ভয় কাজ করে তার মনে।

৩। স্বাস্থ্যহীনতা ও পুষ্টিহীনতাঃ 

সামাজিক সমস্যা স্বাস্থ্যহীনতা ও পুষ্টিহীনতার সহায়ক। স্বাস্থ্যহীনতা ও পুষ্টিহীনতা থেকে সমাজে আরো নানাবিধ সমস্যার উদ্ভব হয়। সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি অনেক সময় দুর্ঘটনায় পতিত হয়। স্বাস্থ্যহীনতা ও পুষ্টিহীনতা যখন মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে তখন অবশ্যই মানুষের মধ্যে একটি আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। সেখান থেকে তাদের নানা দুর্ঘটনায় জড়িয়ে পড়তে পারে।

৪। অধিকাংশ লোকের উপর প্রভাবঃ 

সামাজিক সমস্যার ফলে সমাজের বেশিরভাগ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেমন কুসংস্কার। এর প্রভাবে সমাজের উল্লেখ যোগ্য সংখ্যক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।। কুসংস্কারের প্রভাবে নিরক্ষরতা ও অজ্ঞতাব বৃদ্ধি পায়। কুসংস্কার যখন মানুষের মধ্যে অতিরিক্ত ভাবে বেশি হয়ে যায় তখন অবশ্যই মানুষের মধ্যে একটি ক্ষতির চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়।

৫। সামাজিক উন্নয়নের অন্তরায়ঃ 

সামাজিক সমস্যা সামাজিক উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করে। সমাজের প্রগতি ও অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করে। উদাহরণস্বরূপ জনসংখ্যা স্ফিতি সমাজ উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়। অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে সমাজের নানাবিদ সমস্যা সৃষ্টি হয়। কেননা অতিরিক্ত জনসংখ্যা হলে সমাজে বসবাস করতে নানান ধরনের সমস্যা হয়।

৬। সামাজিক সম্পর্ক শিথিলঃ

সামাজিক সুসম্পর্ক সমাজ উন্নয়নের পূর্ব শর্ত। অথচ সামাজিক সমস্যা সামাজিক বন্ধনকে শিথিল করে ফেলে। ফলে বেকারত্ব দরিদ্রতা নিরক্ষরতা অপরাধ প্রবণতা নিরাপত্তাহীনতা বিচ্ছিন্নতা প্রভৃতি সমস্যা সমাজের উদ্ভব হয়। এগুলো থেকেই সমাজের নানান ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে থাকে। যা থেকে মুক্তি পাওয়া অতটা সহজ হয়ে ওঠে না।

৭। নিরাপত্তাহীনতাঃ 

সামাজিক সমস্যার প্রভাবে ব্যক্তি নিরাপত্তাহীনতার শিকার হয়। মূল মানবিক চাহিদা পূরণেও ব্যর্থ হয়। বিশেষ করে অক্ষম দরিদ্র বেকারবৃদ্ধ ও শিশুরা মারাত্মক সমস্যা সম্মুখীন হয়। যখনই সমাজে নিরাপত্তাহীনতার স্বীকার মানুষ হতে থাকবে তখনই সমাজের মধ্যে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হবে। নিরাপত্তাহীনতায় বেকারদের সংখ্যা অনেক বেশি।

৮। মাথাপিছু আয়ঃ

যে সমাজের সামাজিক সমস্যার যত বেশি সে সমাজের মানুষের মাথাপিছু আয় তত কম। মাথাপিছু আয় কম হলে দেশের জাতীয় আয়ও কম হয়। ফলে সামাজিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। মাথাপিছু আয় কম হলে সমাজে বসবাস করতে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। শুধুমাত্র সমাজের মানুষের সমস্যা এমন কিন্তু নয় সাথে সাথে দেশের উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত হয়।

৯। নেতিবাচক পরিবেশঃ 

সামাজিক সমস্যার প্রভাবে সামাজিক পরিবেশ নেতিবাচক হয়। বিভিন্ন সমস্যার উদ্ভবের ফলে দূষিত পরিবেশে মানুষের জীবনযাপন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। যেমন জনসংখ্যা সমস্যা বাসস্থান সমস্যা প্রভৃতি। সমাজে যখন নেতিবাচক সমস্যার প্রভাব দেখা দেয় তখন নানান ধরনের সমস্যা হতে শুরু করে যা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হয়ে ওঠে না।

১০। অপরাধ ও কিশোর অপরাধঃ 

সামাজিক সমস্যার প্রভাবে সমাজে অপরাধ ও কিশোর অপরাধ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। এসব অপরাধ থেকে আরও অন্যান্য অপরাধের সৃষ্টি হয়। এর ফলে সমাজের মানুষ নিরাপত্তাহীনতা ও দুর্ভোগের শিকার হয়। সমাজে যখন কিশোর অপরাধের সংখ্যা বেড়ে যায় তখন মানুষের বসবাস করতে নানান ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়।

উপসংহারঃ 

পরিশেষে বলা যায় যে, সামাজিক সমস্যার প্রভাব সমাজকে দুর্বল ও অশান্তির দিকে ঠেলে দেয়। সামাজিক নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকে না। সমাজের অগ্রগতি মন্তর হয়ে যায়। সমাজ তথা দেশ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তবে সামাজিক সমস্যার সমাধান প্রতিটি সদস্যই কামনা করে। এমন ভাবে তারা সমাজে টিকে থাকতে চাই।
আরো পড়ুনঃ গণযোগাযোগ কি

আমাদের শেষ কথা,

সামাজিক সমস্যার প্রভাব সম্পর্কে আশা করছি আজকের এই আর্টিকেল থেকে সম্পূর্ণ বিষয় পরিষ্কারভাবে আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে এবং পরিচিতদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। এবং আপনাদের মূল্যবান মতামত কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাবেন। সকলে ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর টেক ইনফো ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url