ব্যক্তিত্বের প্রকারভেদ
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠকগণ, আশা করছি আপনারা সকলে অনেক ভাল আছেন। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ব্যক্তিত্বের প্রকারভেদ নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
আপনারা যারা ব্যক্তিত্বের প্রকারভেদ সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক তাহলে অবশ্যই আজকের এই আর্টিকেল শুরু থেকে একদম শেষ পর্যন্ত পড়ুন। তাহলে চলুন ব্যক্তিত্বের প্রকারভেদ জেনে নেওয়া যাক।
প্রশ্নঃ
ব্যক্তিত্বের প্রকারভেদ?
ব্যক্তিত্বের ধরন তুলে ধর?
ব্যক্তিত্বের মনস্তাত্ত্বিক ধরন তুলে ধর?
ব্যক্তিত্বের প্রকারভেদ আলোচনা কর?
ভূমিকাঃ
ব্যক্তিত্ব হল মানুষের দৈহিক, মানসিক ও আচরণগত অসংখ্য গুণাবলীর বৈশিষ্ট্যর সমন্বিত বহিঃপ্রকাশ। শারীরিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, বংশগত ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে ব্যক্তিত্বের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। গ্রীক দার্শনিক হিপো ক্রোটাসের সময় থেকেই ব্যক্তিত্বকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করার চেষ্টা লক্ষ্য করা যায়। বর্তমান সময়ে মনোবিজ্ঞানীগণ ব্যক্তির মানসিক, দৈহিক প্রকৃতি বিচার বিশ্লেষণ করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ব্যক্তিত্বের শ্রেণীকরণ করার চেষ্টা করেছেন।
আরো পড়ুনঃ ব্যক্তিত্ব কি
ব্যক্তিত্বের প্রকারভেদঃ
মনোবিজ্ঞানী কারল ইয়ং মানসিক গুণাবলীর উপর ভিত্তি করে তিনি তার সাইকোলজিক্যাল টাইপস গ্রন্থে ব্যক্তিত্বকে দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন। এটি মনস্তাত্ত্বিক ধরনের হিসেবেও পরিচিত। নিচে ব্যক্তিত্বের দুটি ধরন তুলে ধরা হল।
- অন্তরমুখী ব্যক্তিত্বঃ
- বহিঃমুখী ব্যক্তিত্বঃ
১। অন্তরমুখী ব্যক্তিত্বঃ
অন্তরমুখী ব্যক্তিত্বের অধিকারী লোকেরা সবসময় নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করে। বাইরের অন্যান্য লোক বা পরিবেশের প্রতি তাদের তেমন কোন আগ্রহ থাকে না। এ ধরনের লোকেরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে থাকে তাদের মধ্যে কল্পনা বিলাসিতা দেখা যাই। তাছাড়া এ ধরনের লোকেরা তুলনামূলক বেশি চিন্তাশীল, আবেগপ্রবণ এবং সংবেদনশীল হয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা নতুন পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে পারে না এবং নতুন ত্বকে সহজে গ্রহণ করতে চায় না। তবে এ ধরনের লোকেরা অত্যন্ত সৃজনশীল সম্ভাবনার অধিকারী হয়ে থাকে। অনেক সৃজনশীল মানুষ যেমন-কবি, সাহিত্যিক, শিল্পীদেরকে সাধারণত এর শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত করা চলে।
আরো পড়ুনঃ স্মৃতির উপাদান গুলো কি কি
২। বহির্মুখী ব্যক্তিত্বঃ
বহির্মুখী ব্যক্তিত্বের অধিকারী ব্যক্তিরা অন্তমুখী ব্যক্তিত্বের ঠিক বিপরীত দিকে অবস্থান করে। এ ধরনের ব্যক্তিত্বের অধিকারী ব্যক্তিরা অত্যন্ত সামাজিক হয়ে থাকে। সকলের সাথে মিশতে এবং সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করতে ব্যাপক আগ্রহী। সামাজিক, রাজনৈতিক ও ব্যবসা-বাণিজ্য এদের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকে। তাই তারা অধিকাংশ সময় গৃহের বাইরে অবস্থান করে। বহির্মুখী ব্যক্তিত্বের অধিকারী লোকেরা যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেদের খাপ খাইয়ে চলতে পারে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। মনোবিজ্ঞানী এর মতবাদটি সমালোচনা থাকলেও আধুনিক মনোবিজ্ঞানীগণ একটি শর্তসাপেক্ষে গ্রহণ করেছে। তারা ব্যক্তিত্বের তৃতীয় ধরনের কথা উল্লেখ করেছেন। সেটি হলো উভয় মুখী ব্যক্তিত্ব। এ ধরনের ব্যক্তিত্বের একই ব্যক্তি কখনো অন্তর্মুখী আবার বহির্মুখী হতে পারে। যেমন-বিপদের সময়ে যখন মানুষ নিরাপত্তাবোধ করে না তখন হয় অন্তর্মুখী, আবার যে পরিবেশে সে নিরাপত্তাবোধ করে সেই পরিবেশে হয় বহিরমুখী।
উপসংহারঃ
পরিশেষে বলা যায় যে, ব্যক্তিত্ব হল একটি জটিল বিষয়। আসলে ব্যক্তিত্ব দেহ মনের এক জীবন্ত ঐক্য। ব্যক্তির, সহজাত প্রবৃত্তি, মানসিক প্রবণতা ও ব্যক্তির আশা-আকাঙ্ক্ষা, কামনা বাসনা, আগ্রহ, জীবনে আদর্শ, অভ্যাস, অভিজ্ঞতা, কল্পনাশক্তি, বুদ্ধি, নৈপুণ্য, দোষ, গুণ প্রভৃতি প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে উপযোজন এর ক্ষমতা এবং বাহ্য প্রতিক্রিয়া-এসব কিছুই সংমিশ্রনেই ব্যক্তিত্ব।
আরো পড়ুনঃ সামাজিক সমস্যা কি
আমাদের শেষ কথা,
ব্যক্তিত্বের প্রকারভেদ সম্পর্কে আশা করছি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা পরিষ্কারভাবে এবং সুন্দরভাবে সকল কিছু ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে এবং পরিচিতদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। এবং আপনাদের মূল্যবান মতামত কমেন্টের মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করবেন। সকলে ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।
এম আর টেক ইনফো ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url