ব্যক্তিত্বের উপাদান

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক গন, আশা করছি আপনারা সকলে অনেক ভাল আছেন। আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে ব্যক্তিত্বের উপাদান নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
ব্যক্তিত্বের উপাদান
আপনারা যারা ব্যক্তিত্বের উপাদান নিয়ে বিস্তারিতভাবে জানতে ইচ্ছুক তাহলে অবশ্যই আজকের এই আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। তাহলে চলুন ব্যক্তিত্বের উপাদান সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

প্রশ্নঃ

ব্যক্তিত্বের উপাদান?
ব্যক্তিত্বের উপাদান গুলো আলোচনা কর?

ভূমিকাঃ 

ব্যক্তিত্ব হল ব্যক্তির কতগুলো স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য যা কোন ব্যক্তিকে অন্য ব্যক্তি থেকে পৃথক করে। ব্যক্তিত্বের গঠন ব্যক্তির পারিপার্শ্বিক ও পারিবারিক প্রভাবের কারণে ভিন্ন হয়ে থাকে। ব্যক্তিত্ব এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো পার্সোনালিটি যা ল্যাটিন শব্দ পার্সোনাল থেকে এসেছে যার অর্থ হল মুখোশ। প্রাচীনকালে অভিনেতারা যে মুখোশ পড়ে অভিনয় করত তাকে পারসোনা বলা হত। পরবর্তীতে বিশেষ গুণাবলী বলতে ব্যক্তিত্ব শব্দটির ব্যবহৃত হয়েছে। বাংলা ভাষায় ব্যক্তিত্ব হল একজন ব্যক্তির চিত্ত আকর্ষণ করার মতো গুণ। এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির মনে যে সামগ্রিক ছাপ অঙ্কিত করে তাই হল সে ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব।

ব্যক্তিত্বের উপাদানঃ 

ব্যক্তিত্বের ব্যক্তিত্বকে ব্যাপকভাবে বিশ্লেষণ করলে ব্যক্তিত্বের কতগুলো উপাদান পাওয়া যায়। এই উপাদানগুলো স্বরূপ গঠনে প্রভাব ফেলে। ব্যক্তিত্বের উপাদান গুলোকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যাই বলে আলোচনা করা হয়। তাহলে চলুন ব্যক্তিত্বের উপাদান জেনে নেয়া যাক।

ক। প্রাকৃতিক উপাদান।
খ। পরিবেশগত উপাদান।

ক। প্রাকৃতিক উপাদানঃ 

ব্যক্তিত্বের এই উপাদানগুলো ব্যক্তির জন্মগত বা সহযাত। মানুষ হিসেবে জন্মানোর কারণে ব্যক্তি এ গুণাবলী গুলো লাভ করে। নিচে ব্যক্তিত্বের প্রাকৃতিক উপাদানগুলো তুলে ধরা হলো।

১। বংশধারা বা উত্তরাধিকারী সূত্রে পাওয়া বৈশিষ্ট্যঃ 

জন্মের সময় পিতা-মাতা বা পূর্বপুরুষের নিকট থেকে পরোক্ষভাবে নিয়ে আসা বৈশিষ্ট্য সমূহ।

২। দৈহিক গঠন ও চেহারাঃ 

দৈহিক গঠন ও চেহারার তারতম্য ব্যক্তিত্বের তারতম্য ঘটায়। বিভিন্ন দেহাকৃতি ও চেহারার পার্থক্য মানুষের নিকট থেকে অভ্যর্থনা ও আচরণে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।

৩। বহিক্ষরা ও অন্তক্ষরা গ্রন্থিঃ 

ব্যক্তিত্বের বিকাশে অন্তক্ষরা গ্রন্থি এবং বহিঃক্ষরা গ্রন্থি প্রভাব বিস্তার করে। এ গ্রন্থি গুলোর ক্রিয়া স্বাভাবিক থাকলে ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের বিকাশ স্বাভাবিক হয়। এসব গ্রন্থির বিকাশ খুব কম বা বেশি হলে ব্যক্তিত্বের তারতম্য লক্ষ্য করা যায়।

৪। স্নায়ুতন্ত্রঃ 

ব্যক্তির মানসিক সামর্থ্যের গতি সঞ্চালন, প্রতিভার বিকাশ, বিশেষ বুদ্ধি স্নায়ুতন্ত্রের উপর নির্ভরশীল। যা ব্যক্তিত্ব গঠনের সাথে সম্পৃক্ত।

খ। পরিবেশগত উপাদানঃ 

বংশগতি ও পূর্বপুরুষেরা অনেক বৈশিষ্ট্য ব্যক্তিত্ব গঠনের পাশাপাশি পরিবেশগত উপাদান দাড়াও ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব গঠনে ভূমিকা রাখে। পরিবেশগত উপাদান দুই ধরনের যথাঃ- 
  1. প্রাকৃতিক পরিবেশ।
  2. সামাজিক পরিবেশ।

১। প্রাকৃতিক পরিবেশঃ 

প্রকৃতির উপাদান গুলো যেমন-জলবায়ু, মৃত্তিকা, জীবজন্তু ইত্যাদির প্রভাব পরিবেশ থেকে ব্যক্তির উপর প্রভাব বিস্তার করে। যার ফলে ব্যক্তি অলস বা কর্মঠ, শক্তিমান বা দুর্বল চিত্তের হয়ে থাকে।

২। সামাজিক পরিবেশঃ 

সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে সামাজিক পরিবেশ দ্বারা ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব প্রভাবিত হয়। সামাজিক পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ দুটি উপাদান উল্লেখযোগ্য যথাঃ- 
  • পারিবারিক পরিবেশ।
  • বিদ্যালয়ের পরিবেশ।
এছাড়াও খেলার মাঠ, কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ, সামাজিক মূল্যবোধ, রীতিনীতি, সংস্কার, আচার, অনুষ্ঠান, সংস্কৃতি প্রভৃতি সামাজিক পরিবেশের আওতাভুক্ত।

উপসংহারঃ 

উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব ব্যক্তির দৈহিক ও সামাজিক উভয়প্রকার উপাদানের ফল। একই ব্যক্তি বিভিন্ন ধরনের সংস্কৃতিতে লালিত-পালিত হলে বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তিত্বের অধিকারী হবে। আবার সামাজিক পরিবেশ বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে বিভিন্ন প্রকার ব্যক্তিত্বের সৃষ্টি হয়।

আমাদের শেষ কথা,

ব্যক্তিত্বের উপাদান সম্পর্কে আশা করছি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা পরিষ্কার এবং সুন্দরভাবে সকল কিছু বুঝতে পেরেছেন। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে এবং পরিচিতজনদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। এবং আপনাদের মূল্যবান মতামত কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। সকলে ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর টেক ইনফো ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url