সমাজকর্মের বৈশিষ্ট্য

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠকগণ, আশা করছি আপনারা সকলে অনেক ভাল আছেন। আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে সমাজকর্মের বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
ছবি
আপনারা যারা সমাজকর্মের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক তাহলে অবশ্যই আজকের এই আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। তাহলে চলুন সমাজকর্মের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

প্রশ্নঃ 

সমাজকর্মের বৈশিষ্ট্য।
সমাজকর্মের বৈশিষ্ট্য গুলো লিখ।
সমাজকর্মের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি।
সমাজকর্মের বৈশিষ্ট্য গুলো তুলে ধর।

ভূমিকাঃ 

সমাজকর্ম একটি সাহায্যকারী পেশা হিসেবে মানুষকে তার সমস্যা সমাধানে পেশাগত সাহায্য প্রদানের সহায়তা করে থাকে। সমাজকর্মের নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এসব বৈশিষ্ট্য গুলো সমাজকর্মকে অন্যান্য পেশা থেকে স্বতন্ত্র করে রেখেছে। রেক্স এ স্কিডমর মিল্টন জি থ্যাকারের এবং ফারলি introduction to social work গ্রন্থে সমাজকর্মের কতিপয় স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেছেন।

সমাজকর্মের বৈশিষ্ট্যঃ 

নিচে সমাজকর্মের বৈশিষ্ট্য সমূহ বর্ণনা করা হলোঃ 

১। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিঃ 

আধুনিক সমাজকর্মের দৃষ্টিভঙ্গি বিজ্ঞান নির্ভর। এখানে কুসংস্কারের কোন সূত্র নেই। সমাজকর্মে মানুষের সমস্যার প্রকৃতি কারণ খুঁজে বের করা হয় এবং সমস্যার প্রেক্ষিতে বাস্তবসম্মত সমাধান দেওয়া হয়। আর যাদের মাধ্যমে সমাধানের কাজ করে থাকে তারা হলেন সমাজকর্মী। উন্নত দেশ সমূহে তাদেরকে সামাজিক ডাক্তার বলা হয়।

২। সংঘটিত সাহায্য দান পদ্ধতিঃ 

আধুনিক সমাজকর্মের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো সুসংগঠিত সাহায্য দান পদ্ধতি। সমাজকর্ম সংগঠিত ও পরিকল্পিত উপায়ে সমাজের সকল মানুষের জীবনমান উন্নয়নের সহায়তা করে থাকে। এ সু সংগঠিত সাহায্য দান প্রক্রিয়ায় একে অন্যকে সমাজ কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড থেকে আলাদা সত্তা দান করেছে।

৩। সক্ষমকারি প্রক্রিয়াঃ 

মানুষকে সক্ষম করে তোলা আধুনিক সমাজকর্মের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। সমাজকর্ম সাহায্যের থেকে এমনভাবে সহায়তা করে যাতে ব্যক্তি তার নিজস্ব সম্পদ ও সামর্থর সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে স্বনির্ভরতা অর্জন করতে পারে। এতে সমাজে পরমুখাপেক্ষিতা দূর হয়। সমাজ উন্নয়নের দিকে ধাবিত হয়।

৪। সর্বজনীন কল্যাণঃ 

সমাজকর্ম কার্যক্রম কোন বিশেষ শ্রেণী বা দলের জন্য নয়। সমাজের সকল শ্রেণী বা দল অর্থাৎ ছোট বড় উঁচু-নিচু ধনী গরিব সাদাকালো প্রভৃতি সকল মানুষের কল্যাণ সাধন করা এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

৫। সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিঃ 

মানুষের দৈহিক মানসিক সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক ও নৈতিক দিকসহ জীবনের সকল দিক পরস্পরের সম্পর্কযুক্ত। এগুলোর একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটির উন্নয়ন চিন্তা করা যায় না। সমাজকর্ম মানুষের সকল দিকের উন্নয়নে সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করে থাকে। এটি এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
আরো পড়ুনঃ মনোযোগ কি

৬। সমস্যার স্থায়ী সমাধানঃ 

সমাজকর্মের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো মানুষের সমস্যা স্থায়ী সমাধান করা। সমস্যার কারণ প্রকৃতি ও পরিধি নির্ণয় করে যথাযথ সমাধানের পথ নির্দেশ দিয়ে থাকে সমাজকর্ম। এখানে সমস্যার স্থায়ী সমাধান প্রক্রিয়ায় সমাজকর্মের বিভিন্ন পদ্ধতি ও নিজস্ব সম্পদের ব্যবহার করা হয়।

৭। পেশাগত জ্ঞান অর্জনঃ 

মানুষের সকল দিকের সমস্যার সমাধানের জন্য সমাজকর্মীদের পেশাগত জ্ঞান অর্জন করা অপরিহার্য। কারণ পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতা সম্পন্ন সমাজকর্মীদের পক্ষেই আধুনিক সমাজকর্ম পরিচালনা করা সম্ভব। তাই পেশাগত জ্ঞান অর্জন সমাজকর্মের একটি বৈশিষ্ট্য।

৮। গতিশীল ভূমিকাঃ 

সমাজ পরিবর্তনশীল কোনো সমাজই সব সময় এক রকম থাকে না। ফলে কোন সামাজিক প্রথার পরিবর্তন সাধিত হলে সেই সমাজের সমস্যারও পরিবর্তন ঘটে। সমস্যার পরিবর্তন হলে সমাজকর্ম কর্মসূচিরও পরিবর্তন ঘটে। তাই গতিশীল ভূমিকা রাখায় সমাজকর্মের আরও একটি বৈশিষ্ট্য।

উপসংহারঃ 

সমাজস্ত সকল মানুষের জীবন মানে উন্নয়ন সাধন করা সমাজকর্মের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে স্বীকৃত। এজন্য উন্নত জীবনমান অর্জনের লক্ষ্যে সমাজকর্মের সহায়তা অত্যাবশ্যক। উপযুক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ প্রমাণ করে যে সমাজকর্ম একটি বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতি হিসেবে মানুষের সমস্যা সমাধানের সক্ষম। একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে সমাজকর্মের উক্ত বৈশিষ্ট্য সমূহের উপস্থিতি অপরিহার্য।
আরো পড়ুনঃ সংবেদন কি

আমাদের শেষ কথা,

সমাজকর্মের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আশা করছি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা পরিপূর্ণ বিষয় ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে এবং পরিচিতদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। সকলে ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর টেক ইনফো ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url