মনোবিজ্ঞানের পদ্ধতি

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক গন, আশা করছি আপনারা সকলেই ভাল আছেন। আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে মনোবিজ্ঞানের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
ছবি
আপনারা যারা মনোবিজ্ঞানের পদ্ধতির সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আজকের এই আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক।

প্রশ্নঃ 

মনোবিজ্ঞানের পদ্ধতি।
মনোবিজ্ঞানের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বলতে কি বোঝো।
মনোবিজ্ঞানের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি বলতে কী বোঝো।

ভূমিকাঃ 

সময়ের বিবর্তনের সাথে সাথে মনোবিজ্ঞান নিজেকে সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে উন্নীত করেছে। মনোবিজ্ঞান আজ একটি বস্তুনিষ্ঠ বিজ্ঞান হিসেবে পরিগণিত। এ বিজ্ঞান মানুষের বিভিন্ন সমস্যার প্রতি লক্ষ্য রেখে প্রতিনিয়ত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ মনোবিজ্ঞানীগণ মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর আচরণের বিভিন্ন দিক সম্বন্ধে উপাত্ত সংগ্রহ করে এবং এর বিশ্লেষণের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। ফলে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব হচ্ছে।

মনোবিজ্ঞানের পদ্ধতিঃ 

বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো তার গবেষণা পদ্ধতি, বিষয়বস্তু নয়। গবেষণায় যদি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির নিয়ম অনুসরণ করা হয় তাহলে তাকে বিজ্ঞান বলা যেতে পারে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি কতগুলো নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। এ নীতিগুলো নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।

১। কার্যকরী সংজ্ঞাঃ

যে বিষয়ের উপর অনুধ্যান করা হচ্ছে তাই স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা বা নির্দেশ করাই হচ্ছে কার্যকরী সংজ্ঞার প্রদান। যখন বৈজ্ঞানিক কোন বিষয়বস্তু সম্পর্কে গবেষণা করেন তখন তিনি উক্ত বিষয়ের একটি কার্যকরী সজ্ঞা প্রদান করেন। কার্যকরী সংজ্ঞা ছাড়া গবেষণার বিষয়বস্তু অস্পষ্ট হয়ে পড়ে এবং উক্ত বিষয়ে সম্পর্কে কোন ব্যর্থ হীন সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় না।

মনোবিজ্ঞানের গবেষণার বিষয়বস্তু হলো প্রাণীর আচরণ। তিনি প্রাণীর বহুবিধ আচরণের মধ্যে যে আচরণটি গবেষণার জন্য বেছে নেন তা সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন। যেমন-মনোবিজ্ঞানী যদি শিক্ষণের উপর বলিয়ান কারীর প্রভাব সম্পর্কে গবেষণা করতে চান, তবে তাকে সর্বপ্রথম শিক্ষণ বলিয়ান কারি ইত্যাদি শব্দসমূহের কার্যকরী সংজ্ঞা দিতে হবে। এবং উক্ত বিষয় তিনি কিভাবে করবেন তার নির্দিষ্ট করতে হবে।

২। পর্যবেক্ষণের নিয়ন্ত্রণঃ 

বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ পর্যবেক্ষণ। বিজ্ঞানসম্মত পর্যবেক্ষণ কে অবশ্যই সো নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। বিজ্ঞানী যখন কোন আচরণ পর্যবেক্ষণ করেন, তখন তিনি গবেষণাগারে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশেই তা করে থাকেন। মনোবিজ্ঞানের উদ্দেশ্য হলো আচরণের কার্যকারিতা সম্পর্ক আবিষ্কার করা। কিন্তু কোন আচরণের কার্যকরিতা আবিষ্কার করতে গেলে।

পারিপার্শ্বিক উদ্দীপক সমীহে কে নিয়ন্ত্রিত করতে হবে। পরীক্ষক সাধারণত একটিমাত্র উদ্দীপক পরীক্ষণ পাত্রের উপর প্রয়োগ করেন। এবং তার ফলাফল লক্ষ্য করেন। কিন্তু একটি মাত্র উদ্দীপক ছাড়া অন্যান্য উদ্দীপকে পরীক্ষনের বাইরে রাখেন। এর ফলে উদ্দীপকটির প্রয়োগের আচরণের কি ধরনের এবং কতটুকু পরিবর্তন ঘটেছে, সে সম্পর্কে তিনি নিশ্চিত হতে পারেন।

৩। পর্যবেক্ষণের পুনরাবৃত্তিতাঃ 

বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির একটি বিশেষ দিক হলো পর্যবেক্ষণের পুনরাবৃত্তিতা। বিজ্ঞানী কখনো একটি মাত্র পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হন না। মনোবিজ্ঞানী কোন একটি আচরণের বারবার পর্যবেক্ষণ করেন। সুতরাং আচরণটি এমন হতে হবে যেন এটির পুনরাবৃত্তি ঘটে। যেসব ঘটনা একবার মাত্র ঘটে সেসব ঘটনা নিয়ে বিজ্ঞানী বিশেষ আগ্রহী নন। পুনরাবৃত্তি ঘটে শুধুমাত্র এমন এক আচরণেই কার্য কারণ আবিষ্কার করা সম্ভব। সেজন্য যেসব আচরণ বারবার ঘটে মনোবিজ্ঞানী সে ধরনের একটি আচরণকে পর্যবেক্ষণ ও পরিমাপ করেন এবং লিপিবদ্ধ করেন।

৪। সাধারণীকরণঃ 

বহু সংখ্যক পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষণ থেকে প্রাপ্ত তথ্য রাশিকে বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানী একটি সাধারন সূত্রে উপনীত হন। যেমন-বিজ্ঞানী যদি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বহু সংখ্যক লোকের উপর লাল আলো ও নীল আলোর প্রতি প্রতিক্রিয়া কাল পর্যবেক্ষণ করেন এবং তিনি লক্ষ্য করেন যে, বেশিরভাগ পরীক্ষণ এই লাল আলোর প্রতিক্রিয়া কাল নীল আলোর চেয়ে কম, তাহলে তিনি একটি সাধারণ সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন। মানুষের আচরণ সম্পর্কে এ ধরনের নিয়ম আবিষ্কার করাই হলো মনোবিজ্ঞানের লক্ষ্য।

উপসংহারঃ 

পরিশেষে বলা যায় যে, কোন বিষয় বস্তু গবেষণা পদ্ধতি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও ব্যবহার যোগ্যতার কথা বিবেচনা করে মনোবিজ্ঞানীকে নিঃসন্দেহে বিজ্ঞান বলতে পারি। কেননা বিজ্ঞানের যেসব নিয়ম বৈশিষ্ট্য রয়েছে তার সবগুলোই মনোবিজ্ঞানের দৃষ্ট হয়।
আরো পড়ুনঃবুদ্ধির পরিমাপ

আমাদের শেষ কথা,

মনোবিজ্ঞানের পদ্ধতি সম্পর্কে আশা করছি আপনারা সকল কিছু আজকের এই আর্টিকেল থেকে ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। সকলে ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর টেক ইনফো ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url