মনোবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও
প্রিয় পাঠকগণ আসসালামু আলাইকুম, আশা করছি সকলে ভালো আছেন। আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব মনোবিজ্ঞান সম্পর্কে।
আপনারা যারা মনোবিজ্ঞান সম্পর্কে জানতে চান তাহলে তারা আজকের এই আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
প্রশ্নঃ
মনোবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও।
মনোবিজ্ঞান বলতে কি বুঝ?
মনোবিজ্ঞান কি?
ভূমিকাঃ
সময়ের বিবর্তনের সাথে সাথে মনোবিজ্ঞান নিজেকে সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে উন্নীত করেছে। মনোবিজ্ঞান আজ একটি বস্তুনিষ্ঠ বিজ্ঞানী হিসেবে পরিগণিত। এ বিজ্ঞান মানুষের বিভিন্ন সমস্যার প্রতি লক্ষ্য রেখে প্রতিনিয়ত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ মনোবিজ্ঞানীগণ মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর আচরণের বিভিন্ন দিক সম্বন্ধে উপাত্ত সংগ্রহ করে এবং বিশ্লেষণের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। ফলে অত্যান্ত দ্রুতগতিতে অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব হচ্ছে। মূলত মনোবিজ্ঞান হল মন ও আচরণের বিজ্ঞান।
আরো পড়ুনঃ বাঙালি সংস্কৃতি কি
মনোবিজ্ঞানঃ
মনোবিজ্ঞানের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Psychology আর এ শব্দটির উল্লেখ পাওয়া যায় খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দীর সাহিত্য ও দর্শন শাস্ত্রে। Psychology শব্দটি দুটি গ্রিক শব্দ Psyche এবং Logos থেকে এসেছে। যার অর্থ যথাক্রমে আত্মা বা মন এবং বিজ্ঞান। সুতরাং শাব্দিক অর্থে মনোবিজ্ঞান হলো আত্মা বা মন সম্পর্কে বিজ্ঞান। প্লেটো, অ্যারিস্টোটল প্রমুখ দার্শনিকদের মতে, আত্মার অনুশীলনকারী বিজ্ঞানী হল মনোবিজ্ঞান। পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম এ গ্রিক দার্শনিক রায়ে মনোবিজ্ঞানকে আত্মা সম্বন্ধীয় বিজ্ঞান রূপে বর্ণনা করেছেন।
প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ
মনোবিজ্ঞানীগণ বিভিন্নভাবে মনোবিজ্ঞানের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিচে মনোবিজ্ঞানের গ্রহণযোগ্য কয়েকটি সংজ্ঞা উল্লেখ করা হলোঃ
মর্গান, কিং, ওয়াইজ এবং স্কোপলার এর মতে,
মনোবিজ্ঞান হল মানুষ ও প্রাণীর আচরণ সম্বন্ধীয় বিজ্ঞান এবং এটি মানুষের সমস্যার এ বিজ্ঞান কে প্রয়োগের অন্তর্ভুক্ত করে।
ক্রাইডার, গোটা লস কোভানহ ও সলোমন এর মতে,
মনোবিজ্ঞানীকে আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়ার বিজ্ঞানসম্মত অনুধ্যান হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে।
রোডিজার, রাষ্টন কেপালডি এবং প্যারিস এর মতে,
মনোবিজ্ঞানী কে আচরণ এবং মানব জীবনের সভ্যবস্তিত অনুধ্যান হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে।
আরো পড়ুনঃ মূল্যবোধ কি
জন. এল. ভোগেল এর মতে,
আমেরিকার সাইট্রিক অ্যাসোসিয়েশন প্রদত্ত সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করে বলেছেন। মনোবিজ্ঞান হল আচরণ ও অভিজ্ঞতার বিজ্ঞানসম্মত অনুধ্যান এবং মানুষের সমস্যায় সে জ্ঞানের প্রয়োগ।
ওয়াইন ওয়াইটেন এর মতে,
মনোবিজ্ঞান হলো সে বিজ্ঞান যা আচরণ এবং অন্তরালে নিহিত শরীরবৃত্তি ও জ্ঞানগত প্রক্রিয়াসমূহ অনুধ্যান করে এবং এটি হলো পেশা যা বাস্তব সমস্যা ও বিজ্ঞানের সঞ্চিত জ্ঞানকে প্রয়োগ করে।
William বাসকিস্ট এবং ডেভিড ডব্লিউ জারবিং এর মতে,
মনোবিজ্ঞান হল জীবের আচরণ এবং জ্ঞানীও ক্রিয়ার বিজ্ঞানসম্মত অনুধ্যান।
John. C. Ruch বলেছেন,
আমরা মনোবিজ্ঞানকে আচরণ ও মানসিক কার্যকলাপের বিজ্ঞান হিসেবে সংগ্রহীত করতে পারি।
মনোবিজ্ঞানী Woodworth এর মতে,
মনোবিজ্ঞান হল পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে সম্পর্কযুক্ত ব্যক্তির ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কে বিজ্ঞান।
রেক্স নাইট ও মর্গারেট নাইট
তাদের মডার্ন ইন্ট্রোডাকশন টু সাইকোলজি গ্রন্থে মনোবিজ্ঞানের যে সংজ্ঞাটি দিয়েছেন সেটি আধুনিক মনোবিজ্ঞানীদের কাছে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে। মনোবিজ্ঞান হল অনুভব ও আচরণের সুসংবদ্ধ আলোচনা।
মনোবিজ্ঞানী শাহের মনোবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন,
মনোবিজ্ঞান হল ধর্ষণের শেষ শাখা যা মানুষের মন বা আত্মা নিয়ে আলোচনা করে।
উপসংহারঃ
পরিশেষে বলা যায় যে, ষোড়শ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ডেকারতে মনোবিজ্ঞানী কে মন সম্বন্ধীয় বিজ্ঞান রূপে বর্ণনা করেছেন। তার মতে, মনোবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু হলো মন এবং তার কাজ হল মনের ভিন্নমুখী ক্রিয়ার অনুশীলন করা। বুদ্ধি, ইচ্ছা, ভালোবাসা ইত্যাদি মনেরই প্রকাশ।
আরো পড়ুনঃ ধর্মীয় সহনশীলতা বলতে কি বুঝায়
আমাদের শেষ কথা,
মনোবিজ্ঞানের সংজ্ঞা সম্পর্কে আশা করছি আপনারা সকল কিছু ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন আজকের এই আর্টিকেল থেকে। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অবশ্যই আপনি আপনার পরিচিত জনদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। সকলে ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।
এম আর টেক ইনফো ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url