প্রেষণার শ্রেণীবিভাগ

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠকগণ, আশা করছি আপনারা সকলেই ভালো আছেন। আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে প্রেষণার শ্রেণীবিভাগ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
ছবি
আপনারা যারা প্রেষণার শ্রেণীবিভাগ সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক তাহলে অবশ্যই আপনারা আজকের এই আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। তাহলে চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

প্রশ্নঃ 

প্রেষণার শ্রেণীবিভাগ।
প্রেষণার শ্রেণীবিভাগ গুলো কি।
প্রেষণার প্রকারভেদ লেখ।

ভূমিকাঃ 

মানুষের ব্যক্তিত্বের প্রকাশ বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে কিন্তু মানুষ কেন -কর্মে লিপ্ত হয়। কিসের তাড়নায় কোন বাসনা পরিতৃপ্তির জন্য মানুষ কর্মে লিপ্ত হয়। এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া বেশ কঠিন। সাধারণভাবে বলা যায় যে, কোন অভাব দূর করার জন্য মানুষ কর্মে লিপ্ত হয়। অর্থাৎ কোনায় উদ্দেশ্য সমাধানের ইচ্ছা মানুষকে কর্মে লিপ্ত করে। মনোবিজ্ঞানী H.A. Marray প্রেষণাকে জৈবিক ও সামাজিক দুই ভাগে ভাগ করেছেন।

প্রেষণার শ্রেণীবিভাগঃ

প্রেশনের শ্রেণীবিভাগ নিয়ে মনোবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। H.A. Marray প্রেষণাকে দুই ভাগে ভাগ করার পক্ষপাতী। ইমিগ্রেশনাকে শরীর বৃত্তির এবং অর্জিত এ দুই ভাগে ভাগ করেছেন। তবে বেশিরভাগ মনোবিজ্ঞানী প্রেষণাকে নিম্নলিখিত দুই ভাগে ভাগ করেছেন যথাঃ- 

১। জৈবিক ও শরীরবৃত্তি ও প্রেষণাঃ 

যেসব প্রেষণা শ্রেণীর জৈবিক অস্তিত্ব থেকে সৃষ্টি হয় সেসব প্রেষণাকে জৈবিক প্রেষণা বলে। যেমন- ক্ষুধা , তৃষ্ণা , নিদ্রা , কাম , মাতৃত্ব , ইত্যাদি জৈবিক প্রেষণা। এসব প্রেষণার পরিতৃপ্তি প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য বলে এসব প্রেষণাকে যৌগিক প্রেষণাও বলা হয়। আবার এসব প্রেষণা প্রাণীর জন্মগত তাই এটি সহজাত প্রেষণা নামেও পরিচিত। জৈবিক প্রেষণার আবার দুই প্রকার যথাঃ- 
  • শারীরিক প্রেষণাঃ যেসব প্রেষণা প্রাণীর শরীর ভান্তরের কোন পরিবর্তন থেকে তৈরি হয় তাকে শারীরিক প্রেষণা বলে।
  • সাধারণ প্রেষণাঃ যেসব প্রেষণার কোন শারীরিক ভিত্তি নেই, তবে সব প্রাণীতে দেখা যায় তাকে সাধারন প্রেষণা বলে।

২। সামাজিক প্রেষণাঃ

সামাজিক প্রেষণা তৈরি হয় মানুষের সমাজ জীবন থেকে যেখানে একজন ব্যক্তির সমাজে অন্যান্য ব্যক্তির সাথে পারস্পরিক সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়। সমাজ জীবন থেকে শিক্ষার মাধ্যমে এ প্রেষণা অর্জন করা হয় বলে একে শিক্ষা লব্ধ বা অর্জিত প্রেষণা বলা হয়। এ প্রেষণা জীবন ধারণের জন্য অত্যাবশ্যিকীয় বা অপরিহার্য নয় বলে একে গন প্রেষণা বলা হয়। যেমন- কৃত্তি প্রেষণা, সামাজিক স্বীকৃতি, সামাজিক 

খ্যাতি ইত্যাদি। মনোবিজ্ঞানী টমাস ১৯২৩ সালে সব ধরনের সামাজিক প্রেষণা কে চারটি মৌলিক শ্রেণীতে ভাগ করেছেন। যথাঃ-
  1. নিরাপত্তা।
  2. স্বীকৃতি।
  3. প্রতিক্রিয়া।
  4. নতুন অভিজ্ঞতা লাভের ইচ্ছা।
মনোবিজ্ঞানী  Murray ১৯৩৮ সালে বলেছেন যে, ২৮ টি সামাজিক প্রেষণায় মানুষের জীবনের সব কাজকর্মের মৌলিক উৎস। তিনি সঞ্চয় সাফল্য শৃঙ্খলা স্বাধীনতা দলভুক্তি ইত্যাদি প্রেষণার নাম উল্লেখ করেন। সামাজিক প্রসনার এরূপ মতভেদের কারণে মনোবিজ্ঞানী হিল গার্ড ১৯৫৩ সালে অল্পট ১৯৩৭ সালে প্রমুখ সামাজিক প্রেষণার শ্রেণীবিভাগ ও তালিকা প্রণয়নের বিপক্ষে মত প্রকাশ করেন। সামাজিক প্রেষণা মূলত দুই প্রকার যথাঃ-
  1. ব্যক্তিগত সামাজিক প্রেষণা।
  2. গোষ্ঠীগত সামাজিক প্রেষণা।

১। ব্যক্তিগত সামাজিক প্রেষণাঃ

ব্যক্তিগত প্রেষণার উদ্ভব হয় ব্যক্তির অভিজ্ঞতা থেকে। ব্যক্তিগত প্রেষণা সমাজের কতগুলো মানুষের মধ্যে থাকে। অন্যদের মধ্যে নাও থাকতে পারে। ব্যক্তির পছন্দ অপছন্দ স্বীকৃতি লাভের ইচ্ছা সাফল্য লাভের ইচ্ছা রুচি অভিমত ইত্যাদি সামাজিক প্রেষণার অন্তর্ভুক্ত।

২। গোষ্ঠীগত সামাজিক প্রেষণাঃ

গোষ্ঠী কত প্রেষণার সৃষ্টি হয় সমাজ জীবন থেকে। সমাজে সকলের মধ্যে একত্রে বাস করা ইচ্ছা গোষ্ঠীগত প্রেষণা।

উপসংহারঃ 

পরিশেষে বলা যায় যে, সব তাড়না অভিজ্ঞতা বা সমাজ জীবন থেকে উদ্বৃত্ত সেসব প্রেষণা বা তাড়নায় সামাজিক প্রেষণা। মানুষের বহুবিধ কাজকর্মের পেছনে অনেক সময় একমাত্র প্রেষণায় ইন্ধন জুগাই। এটি একটি প্রেষণা একেক জন ব্যক্তির জীবনে প্রাধান্য বিস্তার করে। তার জীবনের সব প্রচেষ্টা একই মৌলিক প্রেষণাকে ঘিরে আবর্তিত হয়।

আমাদের শেষ কথা,

প্রেষণার শ্রেণীবিভাগ সম্পর্কে আশা করছি আপনারা সকল কিছু আজকের এই আর্টিকেল থেকে পরিপূর্ণভাবে বুঝতে পেরেছেন। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সঙ্গে এবং পরিচিতজনদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। সকলে ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর টেক ইনফো ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url