মনোবিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্য

আসসালামুয়ালাইকুম প্রিয় পাঠকগণ আশা করছি আপনারা সকলেই ভাল আছেন, আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে মনোবিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করব।
ছবি
আপনারা যারা মনোবিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আজকের এই আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

প্রশ্নঃ 

মনোবিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্য।
মনোবিজ্ঞানের স্বরূপ কি।
মনোবিজ্ঞানের প্রকৃতি কি।
মনোবিজ্ঞানের চরিত্র তুলে ধরো। 
মনোবিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে তুলে ধর।

ভূমিকাঃ 

মনোবিজ্ঞান হল আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়ার বিজ্ঞান। আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়া নিয়ে মানব জীবন। মানুষকে জানতে হলে তার আচরণ ও মানসিক কার্যকলাপ বুঝতে হবে। আর মানুষের আচরণ ও মানসিক কার্যকলাপ বুঝতে হলে মনোবিজ্ঞান সম্বন্ধীয় জ্ঞানের প্রয়োজন।
আরো পড়ুনঃবুদ্ধির পরিমাপ

মনোবিজ্ঞানের স্বরূপ বা প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য ঃ

মনোবিজ্ঞান হলো মানুষ ও অন্যান্য জীবের আচরণ সম্পর্কীয় বিজ্ঞান। নিচে মনোবিজ্ঞানের স্বরূপ বা প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।

১। খন্ডিত আচরণ বা আণবিক আচরণ এবং সামগ্রিক আচরণঃ 

ব্যক্তি বা প্রাণীর আচরণ কে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যথাঃ-ক। খন্ডিত বা আণবিক আচরণ। খ। সামগ্রিক আচরণ। প্রাণীর আচরণকে যখন সূক্ষ্ম উপাদানে বিশ্লেষণ করা হয় তখন প্রত্যেকটি উপাদানকে আণবিক বা খন্ডিত আচরণ বলে। আর ব্যক্তির পরিপূর্ণ আচরণ সামগ্রিক আচরণ আর বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি যদি বিভিন্ন ভঙ্গিমায় বক্তব্য দেন তাহলে আচরণের ওই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এককে খন্ডিত বা আণবিক আচরণ বলা হয়। মনোবিজ্ঞানের মানুষ বা অন্যান্য প্রাণীর এ আচরণের তারতম্য সম্পর্কে বিস্তৃত আলোচনা থাকে।

২। অভ্যন্তরীণ আচরণ ও বাহ্যিক আচরণঃ 

অনেক মনোবিজ্ঞানী মানুষ বা অন্যান্য প্রাণীর আচরণকে আভ্যন্তরীণ ও বায়েজিদ আচরণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যেসব আচরণ বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণ করা যায় না বা অনুমান করতে হয় তাকে অভ্যন্তরীণ আচরণ বলে। যেমন-শিক্ষা, চিন্তন, অনুভূতি প্রভৃতি। আর যেসব আচরণ বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণ করা যায় তাকে বাহ্যিক আচরণ বলে। যেমন-খাদ্য গ্রহণ, হাঁটাচলা, কথা বলার ভঙ্গি ইত্যাদি।

৩। ঐচ্ছিক ও অনৈচ্ছিক আচরণ বা ক্রিয়া কান্ডঃ 

অনেক মনোবিজ্ঞানী প্রাণীর আচরণ আবার পশ্চিমবঙ্গ অনৈচ্ছিক আচরণ বা ক্রিয়া কান্ড হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যেসব আচরণ প্রাণীর সচেতন চেষ্টায় সংগঠিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় তাকে ঐচ্ছিক আচরণ এবং যেসব আচরণ ঐচ্ছিক আচরণের বাইরে থাকে তাকে অনুচ্ছেদ আচরণ বলে। এসব আচরণ মনোবিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত আলোচনার বিষয়গত।

৪। প্রাণীর আচরণ ও মানসিক ক্রিয়াঃ 

মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর আচরণ ও মানসিক ক্রিয়ার সম্পর্কে মনোবিজ্ঞানে আলোচনা ও গবেষণা করা হয়। এজন্য মনোবিজ্ঞানকে জীববিজ্ঞানের অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রাণীদের আচরণ কিভাবে তার বাইরের পরিবেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তা অনুধ্যান করায় মনোবিজ্ঞানের প্রধান উদ্দেশ্য।

৫। উদ্দেশ্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গিঃ 

মনোবিজ্ঞানী ম্যাকডুগাল জীবের আচরণ কে উদ্দেশ্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তার মতে, নির্জীব জড়বস্তু সম্পূর্ণভাবে যান্ত্রিক নিয়ম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। অন্যদিকে জীবের আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকাই নিজের উদ্দেশ্য কি সচেতন ভাবে অনুসরণ করে এবং নিজের প্রচেষ্টার দ্বারা সে লক্ষ্যকে অর্জন করতে চায়। সুতরাং জীবের আচরণ ব্যাখ্যার জন্য উদ্দেশ্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা হয়।

৬। বিভিন্ন মনোবিজ্ঞানীর অভিমতঃ

  1. মনোবিজ্ঞানী ওয়াটসন বলেছেন, মনোবিজ্ঞান হলো মানুষের আচরণ সম্বন্ধীয় বিজ্ঞান।
  2. মনোবিজ্ঞানী ওয়াটসন ও তার সঙ্গীদের মতে, আচরণ বা ব্যবহারই হল মনোবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু। আচরণবাদীরা নিছক যান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মানুষের এই আচরণের ব্যাখ্যা করেছে।
  3. মনোবিজ্ঞানী ম্যাকডুগাল বলেছেন, উদ্দেশ্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মনোবিজ্ঞানকে আচরণ সম্পর্কেও বিজ্ঞান হিসেবে অভিহিত করেছেন।
  4. ওয়াটসন মনে করেছেন, পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা নই মনোবিজ্ঞানের পদ্ধতি। কারণ এ পদ্ধতির সাহায্যে জীবের আচরণকে স্বরূপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

উপসংহারঃ 

পরিশেষে বলা যায় যে, মনোবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় হলো মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর আচরণ ও ব্যবহার পরীক্ষণ পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করা।

আমাদের শেষ কথা,

মনোবিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আশা করছি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা পরিপূর্ণ বিষয়ে ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। সকলে ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর টেক ইনফো ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url