প্রেষণার বৈশিষ্ট্য
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠকগণ, আশা করছি আপনারা সকলেই ভালো আছেন। আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে প্রেষণার বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
আপনারা যারা প্রেষণার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক তাহলে অবশ্যই আজকের এই আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
প্রশ্নঃ
প্রেষণার বৈশিষ্ট্য।
প্রেষণার বৈশিষ্ট্যসমূহ কি কি।
প্রেষণার বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি।
ভূমিকাঃ
মানব আচরণের পিছনে যেসব অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়ার সংক্রিয় ভূমিকা পালন করে সেসবের মধ্যে প্রেষণা অন্যতম। মানুষ তথা প্রাণীর সব ধরনের আচরণের পেছনে প্রেষণার ভূমিকা রয়েছে। প্রেষণাই মানুষকে কর্মে তাড়িত করে। মনোবিজ্ঞান প্রেষণা কে মানব আচরণ ব্যাখ্যার অন্তবর্তী প্রক্রিয়া হিসেবে চিহ্নিত করেন।
আরো পড়ুনঃ পরিসংখ্যান পদ্ধতি কি
প্রেষণার বৈশিষ্ট্যঃ
প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মীদেরকে কার্যসম্পাদনে উদ্বুদ্ধ ও প্রভাবিত করার জন্য প্রেষণা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। আধুনিক ব্যবস্থাপনায় অন্যান্য কাজের মত প্রেষণা কার্যেরও কতিপয় স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। নিতে এসব বৈশিষ্ট্যর ওপর আলোকপাত করা হলো।
১। মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ঃ
প্রেষণা একটি মনস্তাত্ত্বিক বিষয়। যা ব্যক্তির ভিতর থেকে আসে। একজন ব্যক্তির অভ্যন্ত রিন অনুভূতি তার চাহিদা ও কর্ম আচরণকে প্রবাহিত করে। সেজন্য কর্মীদের অধিক মাত্রায় প্রণোদিত করার জন্য তাদের আবেগ অনুভূতিকে যথাযথ মূল্যায়ন করতে হয়।
২। অবিরাম প্রক্রিয়াঃ
মানুষের চাহিদা অফুরান্ত। সে কারণে একটি চাহিদা পূরণ হবার সাথে সাথে অপর একটি চাহিদা তার সামনে হাজির হয়। কাজেই কর্মীদের একবার বা দু'বারের জন্য প্রেষণা দিয়ে সন্তুষ্ট রাখা যায় না। ব্যবস্থাপনাকে তাই প্রেষণা কার্যক্রম অব্যাহতভাবে চালিয়ে যেতে হয়।
৩। ব্যাক্তি আচরণের চালক শক্তিঃ
প্রেষণা হচ্ছে ব্যক্তি আচরণের চালক শক্তি। গাড়ির ইঞ্জিল যেমন গাড়িকে সামনে অগ্রগামী হওয়ার শক্তি যোগায় তেমনি প্রেষণা মানুষকে বা ব্যক্তিকে এগিয়ে যাবার প্রেরণা যোগায়। প্রেষণার অভাবে ব্যাক্তি উদ্যম হীন হয়ে পড়ে এবং কর্ম প্রেরণা লোক পায়।
৪। লক্ষ কেন্দ্রিকঃ
প্রেষণা হচ্ছে লক্ষ্য কেন্দ্রিক। প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রেষণা কার্যক্রম গৃহীত হয়ে থাকে। প্রেষণা কর্মীদের কাজে আগ্রহী করে তোলার মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনের পথ সুগম করে।
৫। মনোবল উন্নয়নের প্রধান অবলম্বনঃ
কর্মপরিবেশে দীর্ঘ সময় কাজ করতে করতে শ্রমিক কর্মীরা ক্লান্ত ও একঘেয়ে আমি অনুভব করে। ফলে কাজের প্রতি কর্মীদের আগ্রহ কমে যায়। প্রেষণা কর্মীদের এ অবস্থা থেকে উদ্ধার করে এবং তাদের মধ্যে দৃঢ় প্রত্যয় বোধ জাগিয়ে তোলে। এতে কর্মীর মনোবল উন্নত হয় এবং তাদের কার্য সন্তুষ্টি বৃদ্ধি পায়।
আরো পড়ুনঃ সমাজ মনোবিজ্ঞান কি
৬। ব্যবস্থাপনা কার্যের একটি অপরিহার্য অঙ্গঃ
প্রেষণা ব্যবস্থাপনা কাজের একটি অপরিহার্য অঙ্গ। ব্যবস্থাপনার মুখ্য উদ্দেশ্য হলো কর্মীদের কাছ থেকে কৌশলে কাজ আদায় করে নেওয়া। আধুনিক ব্যবস্থাপনা দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে কর্মীদের নিকট থেকে জোর করে কাজ আদায় করা যায় না। তাদের নিকট থেকে ভালো কাজ পেতে হলে তাদেরকে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করতে হবে। এই কাজে আর্থিক অনার থিক বিভিন্ন উপায় বা পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে।
৭। অভাব বা চাহিদা প্রেষণার ভিত্তিঃ
অভাব বা চাহিদা মানুষের কর্ম প্রেরণার উৎস। মানুষ কাজের মাধ্যমে তার অভাব পূরণে সক্ষম হয়। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা মানুষের অভাব বা চাহিদা মিটিয়ে তাদেরকে কর্মে অনুপ্রাণিত করতে পারে। কাজেই প্রেষণার মূল ভিত্তি হচ্ছে মানুষের অভাব বোধ বা চাহিদা।
৮। প্রেষণার ইতিবাচক কিংবা নৈতিক বাচক হতে পারেঃ
প্রেষণা ইতিবাচক কিম্বা নীতিবাচক যেকোনো ধরনের হতে পারে। ইতিবাচক প্রেষণা প্রশংসা পুরস্কার স্বীকৃতি ইত্যাদির সাথে সংশ্লিষ্ট আর নীতিবাচক প্রেষণা বল প্রয়োগ ভয় ভীতি প্রদর্শন বদলি বেতন হ্রাস ইত্যাদির সাথে সংশ্লিষ্ট।
উপসংহারঃ
পরিশেষে বলা যায় যে, প্রেষণা মানব আচরণের সাথে অঙ্গা অঙ্গি ভাবে জড়িত। প্রেষণা মানব আচরণের চালিকাশক্তি যা মানুষের মনে কাজ করা তীব্র আকাঙ্ক্ষা জন্ম দেয় যা মানুষকে লক্ষ্য উপনীত হবার জন্য প্ররোচিত ও উৎসাহিত করে। মানব আচরণকে শক্তিশালী প্রণালীবদ্ধ করতে প্রেষণার গুরুত্ব অপরিসীম।
আরো পড়ুনঃ অন্তদর্শন পদ্ধতি কি
আমাদের শেষ কথা,
প্রেষণার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আশা করছি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা পুরোপুরি বিষয় খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অবশ্যই আপনি আপনার পরিচিত জনদের সঙ্গে এবং বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। সকলে ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।
এম আর টেক ইনফো ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url